ডঃ জাকির নায়েক জীবনী
ইসলামী চিন্তাবিদ, বক্তা ও লেখক ডাক্তার জাকির নায়েক ১৯৬৫ সালের ১৮ই অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম জাকির আব্দুল করিম নায়েক। পেশাগত জীবনে তিনি একজন ডাক্তার। মহারাষ্ট্র থেকে শল্যচিকিৎসায় ডিগ্রি অর্জন করলেও ১৯৯১ সাল থেকে তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারে মনোনিবেশ করেছেন। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে তিনি তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে পণ্ডিত এবং অপরিমেয় স্মৃতিশক্তিধর বক্তা হিসাবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন।
জাকির নায়েক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা যেটি পিস টিভি নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকে। তিনি বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম সম্পর্ক কোরআন ও হাদীসের আলোকে সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন। বিভিন্ন ধর্মের তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইসলামের অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করা তাঁর অন্যতম কৌশল।
মুসলিম বিশ্বে জনপ্রিয় হলেও জাকির নায়েক তাঁর কোন কোন বক্তব্য ও মতের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিন লাদেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের মত সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে হুমকির সম্মুখীন করে তাহলে তিনি বিন লাদেনের পক্ষে। 'ইসলামের শত্রু বা যুক্তরাষ্ট্রকে কোন উপায়ে হুমকির সম্মুখীন করাকে সন্ত্রাস' বলা হলে তিনি প্রত্যেক মুসলিমেরই সন্ত্রাসী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন। আফগান বংশোদ্ভূত সন্ত্রাসী নাজিবুল্লাহ জাজি জাকির নায়েকের বক্তৃতা শুনে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন।
সংক্ষিপ্ত জীবন ইতিহাস:
জাকির আবদুল করিম নায়েক ১৮ অক্টোবর ১৯৬৫ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম গ্রহণ করেন । তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট পিটার্স হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন । তারপর তিনি কিশিনচাঁদ চেল্লারাম কলেজে ভর্তি হন । তিনি মেডিসিনের ওপর টোপিওয়ালা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড নাইর হসপিটালে ভর্তি হন । অতঃপর, তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মুম্বাই থেকে ব্যাচেলর অফ মেডিসিন সার্জারি বা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন । তাঁর স্ত্রী ফরহাত নায়েক । তিনি আইআরএফ এর নারীদের শাখায় কাজ করেন । তিনি ১৯৯১ সালে ডাক্তারি পেশায় সবোর্চ্চ ডিগ্রী নেওয়ার পরও ধর্ম শাস্ত্রের একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী পণ্ডিত হয়ে উঠেছেন।[৩][৪] একই সময় তিনি আইআরএফ প্রতিষ্ঠা করেন । ডাঃ জাকির বলেন তিনি আহমেদ দিদাতের দ্বারা অনুপ্রাণিত । ডাঃ জাকির ইসলামের এই প্রখ্যাত দায়ী সাথে ১৯৮৭ সালে সাক্ষাত করেন । (ডাঃ জাকিরকে অনেক সময় ‘’’দিদাত প্লাস’’’ বলা হয়, এই উপাধি দিদাত নিজে দেন ।) ডাঃ জাকির বলেন তাঁর লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষিত মুসলমানরা যারা তাদের নিজ ধর্মকে ত্রুটিপূর্ণ, সেকেলে বলে মনে করেন । তিনি মনে করেন, প্রত্যেক মুসলিমের উচিত ইসলাম সম্বন্ধে ভুল ধারণা গুলো ভেঙে দেওয়া এবং পশ্চিমা মিডিয়ার ইসলামের ওপর অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো । ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলতে যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বর ১১, ২০০১ এর আক্রমণ বা নাইন ইলেভেন এর সাজানো নাটককে তিনি বোঝান । তাঁর কিছু নিবন্ধ ‘’’ইসলামিক ভয়েস’’’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । থমাস ব্লম হানসেন লিখেছেন যে, ডাঃ জাকিরের কুরআন ও হাদিয়াহ মনে রাখার ভঙ্গী একটি সাহিত্য । এ ভঙ্গী বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত । তিনি আরও বলেন, তিনি ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত । তাঁর এ ভঙ্গী বহু মুসলিম ও অমুসলিমদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় । তাঁর অনেক লেকচার রেকর্ড করা হয় এবং ডিভিডি মিডিয়া ও অনলাইনে প্রচারিত হয় । তাঁর লেকচার সাধারণত ইংরেজিতে রেকর্ড করা হয় । তা মুম্বাইতে সপ্তাহান্তে প্রচার করা হয় । তাঁর লেকচার পিস টিভিতেও প্রচার করা হয় । তিনি এই চ্যানেলের সহ- প্রযোজক । বিতর্ক ও সেমিনারে বক্তব্য দেওয়ার সময় বক্তব্যের প্রমাণে তিনি বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে অধ্যায় ও পৃষ্ঠা নম্বর দ্বারা রেফারেন্স দিয়ে থাকেন। তিনি ‘ইসলাম ও আধুনিক বিজ্ঞান’, ‘ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্ম’ এবং ‘ইসলাম ও জড়বাদ’ বিষয়ে লেকচার দেন । পিস টিভি বাংলা সংস্করণ বের করে । এর নাম দেওয়া হয় ‘পিস টিভি বাংলা’ । এখানে ডাঃ জাকিরের লেকচার বাংলায় প্রচার করা হয় । তাছাড়া, বাংলাদেশী চ্যানেল ‘ইসলামিক টিভিতে’ ও তাঁর লেকচার প্রচার করা হয় ।
বক্তৃতা ও বিতর্ক
জাকির নায়েক বিশ্বে অনেক লেকচার দিয়েছেন ও বিতর্ক করেছেন । তাঁর অন্যতম বিখ্যাত বিতর্ক হয় শিকাগোতে উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের সাথে । ডাঃ জাকির ২০০০ সালের এপ্রিলে ‘বিজ্ঞানের আলোয় কুরআন ও বাইবেল’ বিষয়ে তাঁর সাথে বিতর্ক করেন। ডাঃ জাকির বলেন, ‘ ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হলেও, সেপ্টেম্বর ২০০১ থেকে জুলাই ২০০২ এর মধ্যে ৩৪,০০০ আমেরিকান ইসলাম গ্রহণ করেছে’। তিনি বলেন, ‘ইসলাম একটি কারণ ও যুক্তির ধর্ম এবং কুরআনে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রায় ১০০০ আয়াত আছে। সেখানে তিনি পশ্চিমা কনভার্টের সংখ্যা ব্যাখ্যা করেন। ডাঃ জাকিরের অন্যতম জনপ্রিয় থিম হল বিজ্ঞানের সূত্র দিয়ে কোরআনকে যাচাই করা। ২১ জানুয়ারী ২০০৬ ডাঃ জাকির শ্রী শ্রী রবিসঙ্করের সাথে ‘ইসলাম ও হিন্দু ধর্মে ঈশ্বর’ বিষয়ে ব্যাঙ্গালোরে বিতর্ক করেন। ২০০৮ সালে ইসলামি পণ্ডিত লকনো, সাহার কাজী মুফতি আব্দুল ইরফান মিয়াঁ ফিরিঙ্গি মাহালি ডাঃ জাকিরের বিরুদ্ধে ফতোয়া দেন যে তিনি ওসামা বি লাদেনকে সমর্থন করেন এবং তাঁর পদ্ধতি অ-ইসলামিক ফেব্রুয়ারী ২০১১তে, তিনি ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ‘অক্সফোর্ড ইউনিয়ন’ কে পত্র লেখেন।
শান্তি সম্মেলন
নভেম্বর ২০০৭ থেকে ডাঃ জাকির মুম্বাইতে একটি শান্তি সম্মেলন করেন। এখানে তিনি ছাড়াও আরও ২০ জন ইসলামি পণ্ডিত বক্তৃতা করেন। তাঁর অন্যতম লেকচার ২০০৭ সালের শান্তি সম্মেলন । তিনি শিয়া ও সুন্নিদের বিরোধ বিষয়ে কথা বলেন । তখন তিনি খলিফা ইয়াজিদের নামের পর রাদিয়াল্লাহ তা’ আলা (আল্লাহ্ তাদের অনুগ্রহ করুন) বলেন (আল্লাহ্ তার প্রতি সন্তুষ্ট হোন), তখন তিনি বহু মুসলমান দ্বারা ঘৃণিত হন । বিশেষ করে শিয়াদের দ্বারা । তিনি আরও বলেন, কারাবালার যুদ্ধ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত । উক্ত মন্তব্যটিও যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ায়ে ও ওয়েলসে ডাঃ জাকির:
‘শুধু ইসলামই নারীকে সমতা দেয়’ এ বিষয়ে ডাঃ জাকির ২০০৪ সালে ‘ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক অফ অস্ট্রেলিয়া’ এর আমন্ত্রণে মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটিতে বিতর্ক করেন । তিনি আরও বলেন যে, পশ্চিমা জামা- কাপড় মেয়েদের ধর্ষণের অন্যতম কারণ । কারণ, এটা মেয়েদেরকে আকর্ষণীয় করে তোলে পর- পুরুষের কাছে । নিউ এজের সুশি দাস মন্তব্য করেন, নায়েক ইসলামের উপদেশের ও আত্মিক শ্রেষ্ঠত্বের উচ্চ প্রশংসা করেন এবং পশ্চিমা বিশ্বে সাধারণ ভাবে যে বিশ্বাস দেখা যায় তাকে ব্যাঙ্গ করেন ।
যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষেধাজ্ঞা
ডা. নায়েককে ২০১০-এর জুন মাসে যুক্তরাজ্যে ও কানাডায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
তসলিমা নাসরিন সম্পর্কে ডাঃ জাকির
ডঃ জাকির নায়েক বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরিনের "লজ্জা" নামক বইকে কেন্দ্র করে ভারতের মুম্বাইয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের দ্বারা আয়োজিত একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বইটি থেকে ইসলামকেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্ধৃতিকে ভূল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি হিসেবে তুলে ধরেন। এছাড়াও, উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি তসলিমা নাসরিনের উদ্দেশ্যে তার সাথে সরাসরি বিতর্কে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ ব্যক্ত করেন।
অভ্যর্থনা, পুরষ্কার, উপাধি এবং সম্মাননা। তার উল্লেখযোগ্য পুরষ্কারের মধ্যে রয়েছে-
“BOOK REVIEW”
বইয়ের নামঃ আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য
লেখক: ড.জাকির নায়েক
উদ্দেশ্যহীন জীবন
লােকজন গ্রাজুয়েশান করে।
তাদের জিজ্ঞেস করবেন, “আপনি গ্রাজুয়েশন করছেন কেন?” তারা আসলে কারণটা জানেনা।
কারণ হলাে, এই যে তারা গ্রাজুয়েশন করতে যায়; গ্রাজুয়েশন করে আপনি কী করবেন? সে বললাে “আমি জানি না।
আমাদের বেশিরভাগই জীবনটা পার করছি গন্তব্য ছাড়া লােকটার মতাে অথবা কুকুরটার মতাে, যে একটা গাড়িটা ধরতে পিছনে পিছনে ছুটছে।
কোনাে উদ্দেশ্য ছাড়াই।
অনুকরণপ্রিয় মানুষ।
আমাদের অনেকেই না বুঝেই অন্যের উদ্দেশ্যকে নকল করি ।
কোনাে ছাত্রকে আপনি প্রশ্ন করবেন “আপনি কমার্স পড়ছেন কেন?”
বক্তৃতা ও বইসমুহ
ডা. জাকির নায়েক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁর বক্তৃতায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আমন্ত্রিত ও অনামন্ত্রিত শ্রোতাগণ অংশগ্রহণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য বক্তৃতা পরবর্তীতে মূল ইংরেজি সহ একাধিক ভাষায় বই হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো-
- ১। ইসলাম বিষয়ে অমুসলিমদের কিছু সাধারণ প্রশ্নের জবাব।
- ২। কোর'আন ও আধুনিক বিজ্ঞান।
- ৩। কোর'আন কি ঈশ্বরের বাণী?
- ৪। আমিষ খাদ্য কি মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর?
- ৫। বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ।
- ৬। প্রধান প্রধান ধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব।
- ৭। বিজ্ঞানের আলোকে কোর'আন ও বাইবেল।
- ৮। হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের অন্তরনিহিত সাদৃশ্য।
- ৯। সন্ত্রাসবাদ ও জিহাদ।
- ১০। ইদলামের কেন্দ্রবিন্দু।
- ১১। সন্ত্রাসবাদ কি কেবল মুসলিমদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
- ১২। প্রশ্নোত্তোরে ইসলামে নারীর অধিকার।
- ১৩। কেন ইসলাম গ্রহণ করছে পশ্চিমারা?
- ১৪। ইসলামে নারীর অধিকার আধুনিক নাকি সেকেলে?
- ১৫। সুদমুক্ত অর্থনীতি।
- ১৬। ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মের সাদৃশ্য।
- ১৭। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ সমুহের আলোকে হিন্দুধর্ম ও ইসলাম।
- ১৮। আলকোর'আন বুঝে পড়া উচিত।
- ১৯। রসুলুল্লাহর নামায(সালাত)।
- ২০। চাঁদ ও কুর'আন।
- ২১। মিডিয়া ও ইসলাম।
- ২২। সুন্নত ও বিজ্ঞান।
- ২৩। পোশাকের নিয়মাবলী।
OUR FACEBOOK GROUP LINK click here
Groups | Facebook
নিচে এই বই টির ডাউনলোড করার দুইটি লিঙ্ক আছে এবং প্রিভিউ লিঙ্ক ও আছে
কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবেন নিচে আমার ফেসবুক আইডি এর লিঙ্ক দেওয়া আছে.. যদি কোনো ভুল হয় ভুলের জন্য ক্ষমা করবেন
0 Comments: